অনিয়মিত পিরিয়ড কেন হয় - ঘন ঘন মাসিক হওয়ার কারণ কি
পোস্ট সূচিপত্রঃ অনিয়মিত পিরিয়ড কেন হয় - ঘন ঘন মাসিক হওয়ার কারণ কি
ভূমিকা
অনিয়মিত পিরিয়ড কেন হয়
-
চিকিৎসা বিজ্ঞানের মতে অনিয়মিত পিরিয়ড হওয়ার অন্যতম কারণটি হচ্ছে
জন্মনিয়ন্ত্রণ পদ্ধতি অবলম্বন করা । যেমন ইঞ্জেকশন নেওয়া এবং পিল খাওয়া
যদি বিষয়গুলোর কারণে অনিয়মিত পিরিয়ড হতে পারে।
-
হরমোনের পরিবর্তনের কারণে অনিয়মিত পিরিয়ড হতে পারে , হরমোন এর স্বাভাবিক
চলাফেরার কোন ব্যাঘাত এর কারণে অনিয়মিত পিরিওড হতে পারে।
-
নবজাতককে বুকের দুধ খাওয়ানোর জন্য অনিয়মিত পিরিয়ড হতে পারে, এটা একটি
স্বাভাবিক ব্যাপার চিকিৎসা বিজ্ঞানের মতে প্রতিটি স্তন্যদানকারী মা বাচ্চা
প্রসবের অন্ততপক্ষে ৬ মাস পিরিয়ড হতে বিরত থাকেন এই প্রক্রিয়াটি হচ্ছে একটি
প্রোলাক্টিন হরমোনের ফল , দুধ যেটা স্তন্যদানকারী মায়ের দুধ উৎপাদনকে
উদ্দীপিত করে এবং ডিম্বো ডিমবোসফটন বন্ধ করতে সাহায্য করে ।
ঘন ঘন মাসিক হওয়ার কারণ কি
প্রত্যেকটি নারীর জন্য মাসিক অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি ব্যাপার , অনেক সময়
মেয়েদের সুস্থতা এবং অসুস্থতার বড় কারণ হচ্ছে মাসিক , তবে অনেকজন আছেন অনিয়মিত
মাসিক এর সমস্যাই ভোগেন , অনেকেই আছে এ বিষয়গুলো সম্বন্ধে ঠিকমত জানেন
না চলুন তাহলে জেনে নেওয়া যাক ঘন ঘন মাসিক হওয়ার কিছু কারণ ।
-
হরমোন জনিত কারণে<> হরমোন জনিত কারণ হচ্ছে অনিয়মিত মাসিক হওয়ার অন্যতম
কারণ , নারীদের হরমোনের ভারসাম্যহীনতার কারণে প্রায় নারীকে দেখা যায়
পলিসিস্টিক ওভার সিনড্রোম এটাতে ভুগতে , এর ফলে নারীদের ঘন ঘন মাসিক হতে
পারে ।
-
মানসিক টেনশন এর কারণে<> মানুষের মস্তিষ্কে হাইপোথ্যালামাস নামক
একটি বিশেষ অংশ , যেখানে হরমোন কার্যকারিতা থাকে , অতিরিক্ত মানসিক টেনশন এর
কারণে হরমোন গুলো ঠিকমতো তার কার্যকলাপ সম্পাদন করতে পারে না যার ফলে নারীদের
ঘন ঘন মাসিক হতে পারে ।
-
ওজন কম হওয়ার কারণে<> নারীদের স্বাভাবিকের তুলনায় শরীরের ওজন কম হওয়ার
কারণে ঘন ঘন মাসিক হতে পারে , শরীরে অতিরিক্ত ওজন কমাটা স্বাস্থ্যহীনতার কারণ ,
আর স্বাস্থ্যহীনতার কারণে ঘন ঘন মাসিক হতে পারে তাই সুস্বাস্থ্যের জন্য
স্বাভাবিক এবং সঠিক ওজন ও জরুরী
ঘন ঘন মাসিক হলে করণীয়
মাসিক নারীদের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি বিষয় , অনেক সময় অনিয়মিত মাসিক বা ঘন ঘন মাসিক হওয়ার বেশ কিছু কারণ রয়েছে ,
আরো পড়ুনঃ জ্বর কেন হয় জ্বর কমানোর ঘরোয়া উপায়
- কোন প্রকার ওষুধ খাবেন না <> আপনার যদি ঘনঘন মাসিক হয়ে থাকে তাহলে কখনো ভুল করে কোন প্রকার ওষুধ খাবেন না , কারণ বেশ কিছু চিকিৎসা বিশেষজ্ঞের মতে , চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়া ঔষধ খেলে বাচ্চা না হওয়ার মত সমস্যা তৈরি হতে পারে
-
অতিরিক্ত দুশ্চিন্তা থেকে বিরত থাকা <> অতিরিক্ত টেনশন এর কারণে
মস্তিষ্কে চাপের সৃষ্টি হয় , যা থেকে ঘন ঘন মাসিক হতে পারে , তাই অতিরিক্ত
মানসিক চিন্তা থেকে বিরত থাকুন
-
অতিরিক্ত কফি খাওয়া থেকে বিরত থাকুন <> অতিরিক্ত কফি পান এর কারনে , ঘন
ঘন মাসিক হতে পারে তাই অতিরিক্ত কফি খাওয়া থেকে বিরত থাকুন
-
স্বাস্থ্যকর পরিবেশে থাকুন <> আপনি যেই জায়গায় বসবাস করেন সেই
জায়গাটি স্বাস্থ্যকর হওয়াটা অত্যন্ত জরুরী , আশ্বাস্থ্যকর পরিবেশ এর কারণে ঘন
ঘন মাসিক হতে পারে
- মদ্যপান এবং ধূমপান হতে বিরত থাকুন<> এবং ধূমপানের কারণে ঘন ঘন এবং অনিয়মিত মাসিক হতে পারে , তাই এগুলো থেকে বিরত থাকুন
-
অপুষ্টিতে ভোগা<> শরীরে অপুষ্টি বা পুষ্টিহীনতার কারণে ঘন ঘন
মাসিক হতে পারে তাই শরীরের পুষ্টি বজায় রাখতে প্রত্যেকটা নারীর খাদ্য সচেতনতা
বৃদ্ধির প্রয়োজন
মাসিক নিয়মিত করার উপায়
মাসিক নিয়মিত হওয়াটা নারীদের ক্ষেত্রে অত্যন্ত জরুরি একটি বিষয় , কারণ মাসিক
অনিয়মিত হলে নানান রকম টেনশন মনে বাসা বাঁধে , তাই নিচে মাসিক নিয়মিত করার
কয়েকটি উপায় আলোচনা করা হলো ।
- টক জাতীয় ফল বেশি বেশি খাওয়া<> টক জাতীয় ফলে প্রচুর পরিমাণ ভিটামিন সি রয়েছে , আর মেয়েদেরও টক জাতীয় ফল খুব পছন্দের , নিয়মিত টক জাতীয় ফল খেলে নিয়মিত মাসিক হওয়াতে সাহায্য করবে
-
নিয়মিত ব্যায়াম করা<> চিকিৎসা বিজ্ঞানের মতে যেই নারীরা নিয়মিত
ব্যায়াম করে তাদের মাসিক ও নিয়মিত হয় , তাই নিয়মিত মাসিকের জন্য নিয়মিত
ব্যায়াম বা শরীর চর্চা করা অত্যন্ত জরুরী
-
তিন বেলায় আদা খেলে<> আদায় অত্যন্ত কার্যকারি উপাদান রয়েছে , এক কাপ
পানিতে অর্ধেক চা চামচ আদা কুচি ৫ থেকে ৬ মিনিট সিদ্ধ করে প্রতিদিন তিন বেলা
খাবারের পর খাওয়া হলে নিয়ম মত মাসিক হতে সাহায্য করবে
-
স্বাস্থ্যকর পরিবেশ<> অস্বাস্থ্যকর পরিবেশের জন্য অনিয়মিত মাসিক অন্যতম
কারণ , তাই নিয়মিত মাসিকের জন্য স্বাস্থ্যকর পরিবেশ বজায় রাখুন ,
পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন থাকার চেষ্টা করুন
-
ভিনেগার খান<> প্রতিদিন খাওয়ার আগে দেড় থেকে ২ টেবিল চামচ ভিনেগার
পানিতে মিশিয়ে পান করলে , এইটা মাসিক নিয়মিত করতে সাহায্য করবে
- কোর ও তিল<> আপনার অনিয়মিত মাসিক নিয়মিত করার জন্য তিল অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে , কিছু পরিমাণে তিল ভেজে গুড়ো করে কিছু পরিমাণ গুড় ভালোভাবে মিশিয়ে প্রতিদিন সকালে খালি পেটে এক চা চামচ করে খেলে আপনার নিয়মিত মাসিক হতে সাহায্য
অনিয়মিত মাসিকের ঘরোয়া চিকিৎসা
নিয়মিত মাসিক হওয়া প্রত্যেকটা নারীর জন্য অত্যন্ত জরুরি কেননা মাসিকের ওপরে
মেয়েদের শরীরের সুস্থতা এবং অসুস্থতা নির্ভর করে , অনিয়মিত মাসে নানান রকম
টেনশন এর জন্ম দেয় , নিচে অনিয়মিত মাসিকের ঘরোয়া কিছু চিকিৎসা পদ্ধতি দেওয়া
হল
আরো পড়ুনঃ দুপুরে ঘুমালে কি ক্ষতি হয় দুপুরে খাওয়ার পর কি ঘুমানো উচিত
-
ফাস্টফুড এড়িয়ে চলুন <> অতিরিক্ত ফাস্টফুড বা জাঙ্ক ফুড খাওয়া হতে
বিরত থাকুন , কেননা অতিরিক্ত খাওয়ার কারণে শরীরের ওজন বাড়ার আশঙ্কা থাকে , তা
থেকে পিরিয়ডের সমস্যা হতে পারে তাই শরীর চর্চার পাশাপাশি খাবারের ব্যাপারেও
সচেতন থাকতে হবে
- আনারস খান <> আনারসে থাকা উপাদান গুলো প্রাকৃতিকভাবে ব্যথা নাশক হিসেবেও কাজ করে , তাই অনিয়মিত মাসিক হলে আনারস খাওয়ার মাধ্যমে মাসিক নিয়মিত হতে সাহায্য করে
-
ব্যায়াম করুন <> অনিয়মিত পিরিয়ড হলে আপনি নিয়মিত যোগব্যায়াম করুন
চিকিৎসা বিজ্ঞানের মতে প্রতিদিন ২৫ থেকে ৩০ মিনিট যোগ ব্যায়াম করলে অনিয়মিত
পিরিয়ডের সমস্যা দূর হয়ে যায়
-
অসুস্থতার জন্য <> অনেক সময় জ্বর সর্দি কিংবা জটিল কোন অসুস্থতার কারণে
অনিয়মিত পিরিয়ড হতে পারে , সেজন্য অনিয়মিত পিরিয়ড নিয়মিত করতে দ্রুত সুস্থ
হওয়ার বিকল্প নাই
-
জন্মনিয়ন্ত্রণ পদ্ধতি <> জন্ম নিয়ন্ত্রণ এর পদ্ধতি অবলম্বনের ফলে যেমন
ওষুধ পিল কিংবা ইঞ্জেকশন এর কারণে অনিয়মিত পিরিয়ড হতে পারে , সেই ক্ষেত্রে
আপনাকে ইচ্ছুকের পরামর্শ নিতে হবে
-
ওজন কম এর কারণে <> ওজন স্বাভাবিক এর চেয়ে কম হলে অনিয়মিত পিরিয়ড হতে
পারে সেজন্য নিয়মিত পিরিয়ড এর জন্য সুস্বাস্থ্য এর বিকল্প নেই
-
খালি পেটে এলোভেরা খেলে <> অনিয়মিত মাসিক নিয়মিত করতে এলোভেরা
গুরুত্বপূর্ণ একটি ভূমিকা পালন করে , প্রতিদিন সকালে খালি পেটে এলোভেরা অথবা
এলোভেরা পাতার রস মধুর সাথে মিশিয়ে খেলে নিয়মিত পিরিয়ড হতে সাহায্য করবে
-
পেঁপে <> কাঁচা পেঁপে চিবিয়ে খাওয়া নিয়মিত পিরিয়ড হতে অত্যন্ত
গুরুত্বপূর্ণ , আপনি নিয়মিত বেশ কয়েক মাস কাঁচা পেঁপে খেলে সেটা আপনার
নিয়মিত পিরিয়ডে সাহায্য করবে
-
কাঁচা হলুদ খান <> কাঁচা হলুদ অনিয়মিত পিরিয়ড নিয়মিত করতে সাহায্য করে
এবং হরমোনের কার্যক্ষমতা বৃদ্ধি করে একটুখানি কাঁচা হলদে গৌর বা মধু মিশিয়ে
কিছুদিন খেলে নিয়মিত মাসিক হতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে।
লেখক এর মতামত
প্রিয় বন্ধুগণ আজ আমরা উপরের আর্টিকেলটি পরে জানতে পারলাম অনিয়মিত পিরিয়ড কেন হয় - ঘন ঘন মাসিক হওয়ার কারণ কি , ঘন ঘন মাসিক হলে করণীয় , মাসিক নিয়মিত করার উপায় এবং অনিয়মিত মাসিকের ঘরোয়া চিকিৎসা , সম্বন্ধে বিস্তারিত , তাই আপনি যদি উক্ত বিষয়গুলো সম্বন্ধে না জেনে থাকেন , তাহলে এখনই পুরো আর্টিকেলটি মনোযোগ সহকারে পড়ুন । এইরকম আরও তথ্যবহুল পোস্ট পেতে নিয়মিত আমাদের ওয়েবসাইটটি ভিজিট করুন ধন্যবাদ ।