অ্যালোভেরার উপকারিতা ও অপকারিতা
প্রিয় পাঠক আপনি কি অ্যালোভেরার উপকারিতা ও অপকারিতা সহ এলোভেরার গুনাগুন
গুলোর ব্যাপারে জানতে চাচ্ছেন , তাহলে সঠিক জায়গায় এসেছেন , কেননা আজ আমরা
আলোচনা করতে চলেছি অ্যালোভেরার উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে বিস্তারিত।
আপনি যদি শারীরিক বিভিন্ন সমস্যায় ভুগে থাকেন । তাহলে আজকের পোষ্টটি আপনার জন্য
। এলোভেরাই থাকা বিভিন্ন পুষ্টি উপাদান , আমাদের শরীরের বিভিন্ন সমস্যার সমাধানে
গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকে। চলুন তাহলে দেরি না করে জেনে নেওয়া যাক
অ্যালোভেরার উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে।
অ্যালোভেরায় প্রচুর গুনাগুন রয়েছে , যেগুলো বলে শেষ করা সম্ভব নয় , আজকের
পোস্টটি আপনি আপনি মনোযোগ সহকারে পড়লে , অ্যালোভেরার উপকারিতা ও অপকারিতা
এবং এলোভেরা সম্পর্কিত বিভিন্ন তথ্য খুব সহজেই জানতে পারবেন ।
অ্যালোভেরার উপকারিতা ও অপকারিতা ভূমিকা
প্রাচীনকাল থেকেই ভেষজ চিকিৎসা এবং শারীরিক বিভিন্ন সমস্যার সমাধানের জন্য
এলোভেরা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে আসছে। আজকের পোষ্টির মাধ্যমে আজ আমরা
আপনাদের জানাবো অ্যালোভেরার উপকারিতা ও অপকারিতা , এলোভেরা খাওয়ার নিয়ম ,
চুলের যত্নে এলোভেরার উপকারিতা , রূপচর্চায় অ্যালোভেরার উপকারিতা গুলো সম্পর্কে
বিস্তারিত ।
তাই আজকের পোস্টটি টেনে টেনে না পড়ে শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত মনোযোগ সহকারে পড়ুন
। তাহলে আপনি খুব সহজেই জানতে পারবেন অ্যালোভেরার গুনাগুন গুলো সম্পর্কে। চলুন
তাহলে জেনে নেওয়া যাক , অ্যালোভেরার উপকারিতা ও অপকারিতা সহ আরো বেশ কিছু
বিষয়গুলো সম্পর্কে বিস্তারিত।
অ্যালোভেরার উপকারিতা ও অপকারিতা
এলোভেরা গাছ সম্পর্কে কমবেশি আমরা সকলেই অবগত রয়েছি। এলোভেরা হচ্ছে বহুজাতিক
পুষ্টিগুণ সম্পন্ন ভেষজ উদ্ভিদ। এটিকে অনেকেই আমরা ঘৃতকুমারী নামে চিনে থাকি।
এলোভেরা হচ্ছে একটি সরস উদ্ভিদ বা রসালো প্রজাতির উদ্ভিদ। অ্যালোভেরা গাছটি
দেখতে অনেকটা ক্যাকটাস গাছের মত , কিন্তু এটি ক্যাকটাস জাতীয় উদ্ভিদ নয়।
প্রাচীন কাল থেকেই এলোভেরা ভেষজ উদ্ভিদ হিসেবে পরিচিত। এলোভেরা তে পরিমাণে
প্রচুর ঔষধি গুণাবলী রয়েছে।
এলোভেরা প্রধানত আফ্রিকার শুকনো অঞ্চলগুলোতে বেশি পাওয়া যেত। এলোভেরার
উপকারিতা সম্পর্কে বলে শেষ করা যাবে না। প্রাচীনকাল থেকে এলোভেরা শরীর সুস্থ
রাখার পাশাপাশি রূপচর্চা এবং বিভিন্ন ঔষধি গুণাবলী সম্পন্ন উপাদান হিসাবে
ব্যবহৃত হয়ে আসছে। যেকোনো জিনিস অতিরিক্ত ব্যবহার বা সেবন যেমন শরীরের জন্য
ক্ষতিকারক বা বিপদজনক। ঠিক তেমনি ভাবেই এলোভেরা অতিরিক্ত ব্যবহার আপনার শরীরের
নানা রকম পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া অথবা সমস্যার সৃষ্টি করতে পারে।
অ্যালোভেরার উপকারিতা
এলোভেরার উপকারিতা বলে শেষ করা যাবে না। প্রাচীনকাল থেকেই বহুজাতিক ভেষজ ঔষধি
গাছ হিসাবে ব্যবহৃত হয়ে আসছে অ্যালোভেরা। এলোভেরা তে প্রচুর পরিমাণে আইরন
, ফলিক অ্যাসিড , পটাশিয়াম , ক্যালসিয়াম , সোডিয়াম , ভিটামিন বি ২ ,
ভিটামিন বি ৬ ইত্যাদি সহ আরো বহু পুষ্টি উপাদান রয়েছে এই ভেষজ উদ্ভিদ টিতে।
অ্যালোভেরার উপকারিতা সম্পর্কে নিচে বিস্তারিত আলোচনা করা হলো।
-
হৃদরোগের ঝুকি কমায়। এলোভেরা খাওয়ার ফলে রক্তের কোলেস্টেরলের মাত্রা কমে
যায় , এবং শরীরের দূষিত রক্ত বের করে দিতে সাহায্য করে। যার ফলে হৃদয়কে
ঝুঁকি অনেকটা কমে যায়।
-
ডাইবেটিক নিয়ন্ত্রণেঃ ডায়াবেটিক নিয়ন্ত্রণ করতে নিয়মিত
অ্যালোভেরার শরবত পান করলে , শরীরে রক্তের গ্লুকোজের পরিমাণ কমে যায় এবং
ডায়াবেটিক নিয়ন্ত্রণ করতে সাহায্য করে।
-
হাঁপানি দূর করতেঃ হাঁপানি দূর করতে এলোভেরা ব্যবহার করা হয়। এজন্য
এলোভেরার পাতা ব্যবহৃত হয় , এলোভেরার পাতা থেকে জেলগুলো বের করে শুধু
পাতাটি সেদ্ধ করে নিয়মিত ভাব নিলে হাঁপানি রোগ অনেকটাই নির্ময় করা
সম্ভব।
-
ওজন কমাতেঃ ওজন কমাতে এলোভেরা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকে।
এলোভেরায় থাকা এন্টি ইনফ্লামেটরি উপাদান শরীরের মেদ কমাতে দ্রুত সাহায্য
করে। নিয়মিত এলোভেরা খেলে আপনি দ্রুত ওজন কমাতে সক্ষম হবেন।
-
হজম শক্তি বৃদ্ধিঃ হজম শক্তি বৃদ্ধির জন্য অ্যালোভেরা খুবই উপকারী।
যাদের হজমজনিত সমস্যা রয়েছে তারা নিয়মিত এলোভেরার জুস অথবা অ্যালোভেরার
রস পান করলে , হজম শক্তি দ্রুত বৃদ্ধি পাবে এবং হজম তন্ত্রের ক্ষতিকারক
ব্যাকটেরিয়া থেকে বাঁচাতে সাহায্য করেবে।
-
প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধিঃ এলোভেরা তে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন ও খনিজ উপাদান
রয়েছে। যেগুলো মানসিক চাপ এবং রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে সাহায্য করে।
নিয়মিত এলোভেরা খাওয়ার ফলে শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি
পায়।
-
মুখের ঘা ভালো করেঃ মুখের ঘা ভালো করতে এলোভেরা খাওয়া খুবই উপকারী।
এলোভেরাই থাকা এন্টি ব্যাকটেরিয়াল উপাদান যা মুখের সংক্রমণ বা ইনজেকশন এবং
ঘাওয়া হওয়া রোধ করতে সাহায্য করে।
-
ব্যথা কমাতে সাহায্য করেঃ আমাদের শরীরে কোথাও পুড়ে গেলে বা আঘাতপ্রাপ্ত
হলে ক্ষতস্থানে এলোভেরা জেল ব্যবহার করলে দ্রুত ব্যথা এবং যন্ত্রণা থেকে
মুক্তি মিলবে। এলোভেরই থাকা এন্টি ইনফ্লামেটরি উপাদান ক্ষতস্থানটিতে ব্যথা
এবং যন্ত্রণা কমাতে সাহায্য করে।
-
বিভিন্ন সংক্রমণ প্রতিরোধ করেঃ অ্যালোভেরাই থাকা প্রচুর পরিমাণে এন্টি
ব্যাকটেরিয়াল এবং এন্টিভাইরাস উপাদান গুলো আমাদের শরীরের বিভিন্ন
ব্যাকটেরিয়া বিভিন্ন ভাইরাস ঘটিত ইনফেকশন হওয়া থেকে রক্ষা করে । এবং
শরীরের ব্যাকটেরিয়া এবং ভাইরাস এর সংক্রমণ এর হাত থেকে রক্ষা করে।
-
কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করতেঃ এলোভেরা থাকা অ্যান্থা কুইনন গ্লাইকোসাইট নামক
একটি উপাদান , আমাদের শরীরের কোষ্ঠকাঠিন্যর সমস্যা দূর করতে সাহায্য করে।
নিয়মিত এলোভেরা জেল গ্রহণ করলে কোষ্ঠকাঠিন্য সমস্যা দূর হওয়ার পাশাপাশি
হজম ক্ষমতাও বৃদ্ধি করতে সাহায্য করবে।
অ্যালোভেরার অপকারিতা
বহু ঔষধি গুণ সম্পন্ন এলোভেরার উপকারিতা সম্পর্কে উপরে বিস্তারিত জানতে পারলাম
। তবে প্রতিটা জিনিসের ক্ষেত্রেই অতিরিক্ত কোনো কিছুই ভালো না । যে কোন জিনিস
মাত্রা অতিরিক্ত ব্যবহারে ফলে শরীরে নানা রকম সমস্যা এবং পার্শ্ব প্রতিক্রিয়ার
সৃষ্টি হতে পারে। এলোভেরার অতিরিক্ত ব্যবহারেও কিছু অপকারিতা রয়েছে , চলুন
সেগুলো জেনে নেওয়া যাক।
-
এলোভেরা অতিরিক্ত ব্যবহারের ফলে ত্বক পুড়ে যেতে পারে , এবং শরীরে বা ত্বকে
লাগছে ভাব হতে পারে।
-
অতিরিক্ত অ্যালোভেরা খাওয়ার ফলে ডায়রিয়াজনিত সমস্যার সৃষ্টি হতে
পারে।
-
যাদের অ্যালার্জি রয়েছে , তারা যদি অতিরিক্ত অ্যালোভেরা ব্যবহার করে ,
তাহলে তাদের এলাকার জনিত সমস্যা বৃদ্ধি হতে পারে।
-
গর্ভবতী মায়েদের এলোভেরা খাওয়া একদমই উচিত নয়। কারণ এটি জরায়ু সংকোচন
করে ফেলে এবং বাচ্চাদের টয়লেট সমস্যা সৃষ্টি হতে পারে।
-
অতিরিক্ত এলোভেরা সেবন করার ফলে প্রসবের রং লালচে হয়ে যেতে পারে।
অ্যালোভেরা খাওয়ার নিয়ম
এলোভেরা অনেক রকম ভাবে খাওয়া যায় । ছোট থেকে বড় সকল মানুষই অ্যালোভেরা
নিশ্চিন্তে খেতে পারেন। একাধিক গুণাগুণ সম্পন্ন এলোভেরাই , উপকারিতাও রয়েছে
প্রচুর পরিমাণে। এলোভেরা জুস তৈরি করে খেলে তা শরীরের জন্য অত্যন্ত
উপকারী।
এছাড়াও আপনি নিয়মিত সকাল বেলায় খালি পেটে যদি এলোভেরা জুস খান । তাহলে সেটি
আপনার শরীরের জন্য আরও বেশি উপকারী।
রূপচর্চায় অ্যালোভেরার উপকারিতা
বেশিরভাগ ক্ষেত্রে রূপচর্চার জন্যই এলোভেরা বেশি ব্যবহৃত হয়ে থাকে। ত্বকের
সৌন্দর্য বৃদ্ধি করতে এবং রূপচর্চায় এর ব্যবহার প্রাচীনকাল থেকেই। রূপচর্চায়
এলোভেরার উপকারিতা গুলো আলোচনা করা হল।
-
এলোভেরা প্রচুর পরিমাণে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট রয়েছে , যা ত্বকের ময়েশ্চার
ধরে রাখতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।
-
নিয়মিত এলোভেরা জেল ব্যবহার এর ফলে ত্বকের ইনফেকশন দূর হয় এবং ত্বকের
রোদে পোড়া ভাব এবং ত্বকের ডার্ক সার্কেল দূর করতে সাহায্য করে।
-
এলোভেরাই থাকা ল্যাকটিন ও মেনাস , ত্বকের ব্রণ ও কালো দাগ এবং মেছতা দূর
করতে সাহায্য করে।
-
এলোভেরা ব্যবহারের ফলে ত্বককে ভেতর থেকে পরিষ্কার করে এবং ত্বকের যাবতীয়
মৃত কোষ অপসারণ করতে সাহায্য করে।
- এলোভেরাই থাকা প্রচুর পরিমাণে খনিজ পদার্থ , ত্বকের কোষ সুস্থ রাখে এবং কোষের ক্ষয় প্রতিরোধ করতে সাহায্য করে এবং রক্তে শর্করার মাত্রা কমায়।
চুলের যত্নে অ্যালোভেরার উপকারিতা
চুলের যত্নে এলোভেরা অত্যন্ত উপকারী এবং কার্যকরী ভূমিকা পালন করে। চুলের যে
কোন ধরনের সমস্যা সমাধানে অত্যন্ত কার্য করে এলোভেরা। এলোভেরাতে থাকা ভিটামিন
সি যেটা চুল পড়া বন্ধ করতে সাহায্য করে ।
এছাড়াও চুলের যত্নে এলোভেরার উপকারিতা বেশ কিছু রয়েছে। অ্যালোভেরাই থাকা
ইউরিয়া , নাইট্রোজেন , সেনা মনিক এসিড , সালফার , ইত্যাদি উপাদান থাকার কারণে
চুলের যাবতীয় সমস্যার সমাধান খুব সহজেই করতে পারে।
- চুলের উজ্জ্বলতা বৃদ্ধি করে
- চুলের খুশকি সমস্যার সমাধান করে
- চুল সিল্কি এবং সুন্দর করে তোলে
- এলোভেরা চুল পড়া বন্ধ করে
-
চুলের ত্বকের এলার্জি দূর করে এলোভেরা
-
চুলের আগা ফাটার সমস্যার সমাধান করে
- চুলের গোড়া মজবুত এবং শক্ত করে
অ্যালোভেরার উপকারিতা ও অপকারিতা শেষ কথা
পরিশেষে বলতে গেলে উপরের আর্টিকেলটি পড়ে আজ আমরা জানতে পারলাম অ্যালোভেরার
উপকারিতা ও অপকারিতা , এলোভেরা খাওয়ার নিয়ম , রূপচর্চায় অ্যালোভেরার উপকারিতা
, চুলের যত্নে এলোভেরার উপকারিতা , ইত্যাদি সম্পর্কে বিস্তারিত।
আশা করছি আজকের আর্টিকেলটি শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত আপনি মনোযোগ সহকারে পড়েছেন।
এবং এলোভেরার গুনাগুন সহ বিভিন্ন উপকারিতা সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে
পেরেছন।
আমাদের ওয়েবসাইটটিতে নিয়মিত স্বাস্থ্য বিষয়ক , তথ্য প্রযুক্তি বিষয়ক ,
সমসাময়িক নিউজ সহ সকল ধরনের নিউজ এবং আপডেট নিউজ নিয়মিত পাবলিশ করা হয়। সকল
ধরনের আপডেট সবার আগে পেতে নিয়মিত আমাদের ওয়েবসাইটটি ভিজিট করুন ধন্যবাদ।