জমি খারিজ করার পদ্ধতি - জমি খারিজ করতে কতদিন সময় লাগে

প্রিয় বন্ধুগণ আজ আমরা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি বিষয় জমি খারিজ করার পদ্ধতি - জমি খারিজ করতে কতদিন সময় লাগে সম্পর্কিত বিস্তারিত তথ্য নিয়ে আপনাদের সামনে হাজির হয়েছি। আপনি কি জমি খারিজ করার পদ্ধতি - জমি খারিজ করতে কতদিন সময় লাগে এই সম্পর্কে জানতে চাচ্ছেন তাহলে সঠিক জায়গায় এসেছেন। আজকের আর্টিকেলটি মনোযোগ সহকারে পড়ার মাধ্যমে আপনি জমি খারিজ করার পদ্ধতি - জমি খারিজ করতে কতদিন সময় লাগে এই ব্যাপারে বিস্তারিত তথ্য এবং সঠিক দিকনির্দেশনা পেয়ে যাবেন।

আজকের আর্টিকেলটি আপনি যদি শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত মনোযোগ সহকারে পড়েন তাহলে জমি খারিজ করার পদ্ধতি - জমি খারিজ করতে কতদিন সময় লাগে এছাড়া আরো বেশ কিছু জমি সংক্রান্ত বিষয় সম্পর্কে সঠিক দিকনির্দেশনা এবং তথ্য পেয়ে যাবেন। চলুন তাহলে দেরি না করে জেনে নেওয়া যাক জমি খারিজ করার পদ্ধতি - জমি খারিজ করতে কতদিন সময় লাগে সে সম্পর্কে।

প্রিয় পাঠক জমি খারিজ করতে গিয়ে অনেক সময় আমরা মুহুরী বা দালালের খপ্পরে পড়ে বহু টাকা নষ্ট করে থাকি। সঠিক পদ্ধতি জানা থাকলে কোন দালাল বা মুহুরী ছাড়া আমরা নিজেরাই খুব সহজে জমি খারিজ করার পদ্ধতি গুলো সম্পাদন করতে পারব। 

তাই আপনাদের জন্য আজকে আমাদের আয়োজন ,জমি খারিজ করার পদ্ধতি - জমি খারিজ করতে কতদিন সময় লাগে , জমি খারিজ করতে কি কি কাগজ লাগে ,জমি খারিজ করতে কত টাকা লাগে ২০২৩ ইত্যাদি বিষয়গুলো সম্পর্কে বিস্তারিত। তাই আজকের পোস্টটি আপনার জন্য গুরুত্বপূর্ণ । তাই পাঠাক আজকের পোস্ট না টেনে মনোযোগ সহকারে শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত বিস্তারিত পড়ুন।

জমি খারিজ হচ্ছে রাষ্ট্রীয় ও প্রজাতন্ত্র আইন ১৯৫০ এর ১৪৩ ধারা অনুযায়ী কোন ব্যক্তি কোন জমি কেনার পর , বা ওয়ারিশ সূত্রে পাওয়া জমির মালিকানা লাভ করার পর , পূর্বের মালিকের নামের পরিবর্তে নতুন ক্রেতার নাম বা নতুন মালিকের নাম জমি সংশ্লিষ্ট খতিয়ানে অন্তর্ভুক্ত করা , এবং ক্রেতা বা নতুন মালিকের নামে নতুন খতিয়ান খোলার বা রেকর্ড করার হালনাগাদ করনের যে কার্যক্রম রয়েছে তাকে খারিজ বা মিউটেশন বলে।

• জমি খারিজ করার জন্য আপনাকে প্রথমে যেটি করতে হবে। উপজেলা ভূমি অফিস বা এসিল্যান্ড অফিস এ জমি খারিজ করার জন্য আবেদন করতে হবে।
• উপজেলা ভূমি অফিস বা এসি ল্যান্ড অফিসে গিয়ে প্রথমে আপনাকে জমি খারিজ করার জন্য নির্দিষ্ট যে ফর্মটি রয়েছে সেটি আপনাকে সংগ্রহ করতে হবে। ফর্মটি আপনি অনলাইন থেকেও সংগ্রহ করতে পারবেন।
• এরপর ফরমটিতে জমি খারিজ আবেদনকারীর নাম , ঠিকানা , রেজিস্ট্রি করা দলিলের নাম্বার ও সাল , এসএ , বিএস , ইএস , খতিয়ান নম্বর , দাগ নম্বর সহ ইত্যাদি তথ্য নির্ভুলভাবে দিয়ে পূরণ করতে হবে।
• এরপর ফরমের নিচের দিকে আবেদনকারীর নাম ও মোবাইল নম্বর বসাতে হবে । এবং উপরে আবেদনকারীর পাসপোর্ট সাইজের ছবি বসাতে হবে।
• এরপর জমি সংশ্লিষ্ট বাকি সকল কাগজপত্র একসঙ্গে করে , উপজেলা ভূমি অফিস বা এসিল্যান্ড অফিসে জমা দিতে হবে। এবং সেখান থেকে আপনাকে একটি রশিদ সহ পরবর্তী তারিখ জানিয়ে দেওয়া হবে।
• সাধারণত জমি খারিজ করার আবেদন করার ২০ কার্য দিবসের মধ্যে ভূমি অফিস বা এসিল্যান্ড অফিস থেকে আপনাকে ডাকা হবে। সেখানে আপনি জমি খারিজ আবেদনের সময় যে কাগজপত্র গুলো জমা দিয়েছিলেন, সেই কাগজপত্র গুলোর মূল কপি উক্ত ভূমি কর্মকর্তার কাছে প্রদর্শন করতে হবে।
• এরপর আপনার জমি খারিজ আবেদন করা প্রাথমিকভাবে সফল হলে , উক্ত জমি সংশ্লিষ্ট সকলকে ব্যক্তিকে নোটিশ দেওয়া হবে এবং শুনানির দিন ধার্য করে দেওয়া হবে। কারণ উক্ত জমি খারিজ সম্পর্কে জমি সংশ্লিষ্ট কোন ব্যক্তির কোন আপত্তি আছে কিনা , সেটা জানার জন্য নোটিশ দেওয়া হবে এবং শুনানি করা হবে। এখানে জমি সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি বলতে বিক্রেতা বা যেই ওয়ারিশ সূত্রে পাওয়া সেই ওয়ারিশ।
• এরপর ধর্য করা শুনানির দিন জমি সংশ্লিষ্ট সকল ব্যক্তিদের কাছ থেকে কোন আপত্তি না পাওয়া গেলে , এসিল্যান্ড উক্ত জমিটি খারিজ করার জন্য চূড়ান্ত অনুমোদন দিয়ে দেবেন। আর যদি জমি সংশ্লিষ্ট কোন ব্যক্তির কাছ থেকে কোন আপত্তি থেকে থাকে , তাহলে এসিল্যান্ড খারিজ করা আবেদনটি বাতিল করে দিতে পারেন।
• এরপর আপনার জমি খারিজ করার আবেদনটি চূড়ান্ত হয়ে গেলে আপনাকে সংশ্লিষ্ট অফিস থেকে মোবাইলে মেসেজ দিয়ে জানানো হবে। এরপর আপনি উক্ত উপজেলা ভূমি অফিস বা এসিল্যান্ড অফিসে গিয়ে খারিজ করার বর্ধিত ফি পরিশোধ করে আপনার জমির নতুন খতিয়ানটি সংগ্রহ করতে পারবেন। 
• আশা করছি আপনি উপরে আর্টিকেলটি মনোযোগ সহকারে পড়লে এবং অনুসরণ করলে খুব সহজেই জমি খারিজ সম্পর্কিত সকল কাজ খুব সহজেই সম্পাদন করতে পারবেন।

• ক্রয় সূত্রে মালিক হলে রেজিস্ট্রি করা দলিলের সার্টিফাইড কপি লাগবে।
• ওয়ারিশ সূত্রের মালিক হলে , তিন মাসের মধ্যে ইস্যু করা ওয়ারিশ সনদপত্র লাগবে।
• মূল আবেদন ফরম , ২০ টাকার কোর্ট ফি সহ।
• খারিজ আবেদনকারীর ১ কপি পাসপোর্ট সাইজের ছবি , একাধিক আবেদনকারী হলে প্রত্যেকের জন্য ১ কপি পাসপোর্ট সাইজের ছবি।
• ক্রয় কৃত জমির সবগুলো খতিয়ানের ফটোকপি লাগবে।
• বকেয়া ভূমি উন্নয়ন কর পরিশোধের রশিদ।
• সর্বশেষ জমি জরিপের পর বায়া দলিলের ফটো কপি।
• খারিজ আবেদনকারীর জাতীয় পরিচয় পত্রের সত্যায়িত ফটোকপি , যেমন- জাতীয় পরিচয় পত্র , ভোটার আইডি , জন্ম নিবন্ধন , পাসপোর্ট , ইত্যাদি লাগবে।

জমি খারিজ করতে গিয়ে অনেক সময় আমরা মোহরি বা দালালদের খপ্পরে পড়ে বহু টাকা নষ্ট করি। আপনি মুহুরী বা দালালদের কাছে না গিয়ে , আপনি আপনার এলাকার ভূমি অফিসে গিয়ে এই কাজগুলো খুব সহজেই সম্পন্ন করতে পারবেন। এবং ভূমি অফিস সরকার নির্ধারিত খরচের বাইরে আর কোন খরচ আপনার কাছ থেকে নিতে পারবে না।

সর্বশেষ ভূমি মন্ত্রণালয়ের গেজেট অনুযায়ী জমি খারিজ করতে ১১৫০ টাকা লাগে , কোন কোন ক্ষেত্রে টাকা লাগে এবং কত টাকা লাগে তা আপনি land.gov.bd এই ওয়েবসাইটে দেখতে পাবেন , এছাড়াও খারিজ সম্পন্ন হওয়ার পর , খারিজ কৃত কাগজের উপরে ২০ টাকা দামের কোর্ট ফি লাগিয়ে দেওয়া হবে , সুতরাং অফিসিয়াল ভাবে সর্বমোট ১১৭০ টাকা খরচ করতে হবে , এছাড়াও অনলাইনে কিছু খরচ করতে হতে পারে।

পরিশেষে বলতে গেলে উপরের আর্টিকেলটি পড়ে আজ আমরা বিস্তারিত জানতে পারলাম জমি খারিজ করার পদ্ধতি - জমি খারিজ করতে কতদিন সময় লাগে , জমি খারিজ করতে কি কি কাগজ লাগে ,জমি খারিজ করতে কত টাকা লাগে ২০২৩ সম্পর্কে।

আশা করছি আপনি উপরের আর্টিকেলটি শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত মনোযোগ সহকারে পড়লে , এবং উপরোক্ত ধাপগুলো সঠিকভাবে অনুসরণ করলে খুব সহজেই , আপনি দালাল বা মুহুরীর ঝামেলা ছাড়াই জমি খারিজ সম্পর্কিত সকল বিষয়গুলো সম্পাদন করতে পারবেন।

জমি খারিজ সম্পর্কিত আরো কোন প্রশ্ন থাকলে আমাদের জানাবেন। আমাদের ওয়েবসাইটটিতে নিয়মিত তথ্যপ্রযুক্তি , স্বাস্থ্য বিষয়ক , এবং সমসাময়িক সকল ধরনের নিউজ এবং ইনফরমেশন নিয়মিত পাবলিশ করা হয় । নিয়মিত তথ্যবহুল পোস্ট পেতে আমাদের ওয়েবসাইটটি ভিজিট করুন ধন্যবাদ