কিডনিতে পাথর হওয়ার লক্ষণসমূহ - কিডনি সুস্থ রাখার উপায়
কিডনিতে পাথর হওয়ার লক্ষণসমূহ সম্পর্কে প্রিয় পাঠক আপনি যদি জানতে চাচ্ছেন ,
তাহলে সঠিক জায়গায় এসেছেন । কেননা আজ আমরা আলোচনা করব ,কিডনিতে পাথর হওয়ার
লক্ষণসমূহ সহ কিডনি বিষয়ক আরো বেশ কিছু বিষয় সম্পর্কে । সুতরাং আপনি যদি কিডনি
সমস্যায় ভোগেন অথবা কিডনিতে পাথর হওয়ার লক্ষণসমূহ কিডনির পাথর প্রতিকার এর
উপায় জানতে চান , তাহলে আজকের আর্টিকেলটি না টেনে শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত মনোযোগ
সহকারে পড়ুন।
কিডনিতে পাথর হওয়ার লক্ষণসমূহ কিডনির পাথর প্রতিকার এর উপায় সম্পর্কে আজ আমরা
জানবো। বর্তমান বিশ্বে প্রতি বছর প্রায় ৩৫ থেকে ৪০ মিলিয়ন মানুষ কিডনি বিষয়ক
সমস্যায় ভোগেন। আমাদের বাংলাদেশে প্রতিবছর ৪০ থেকে ৪৫ হাজার মানুষ কিডনি
সমস্যায় ভুগেন। সঠিক কিছু নিয়ম এবং খাদ্যাভ্যাসের কিছু পরিবর্তনের ফলে কিডনি
সুস্থ রাখা এবং কিডনিতে পাথর হওয়া প্রতিরোধ করা সম্ভব । আজ আমরা আপনাদেরকে কিডনি
বিষয়ক বেশ কিছু তথ্য জানাতে চলেছি । তাই শেষ পর্যন্ত আমাদের সঙ্গেই থাকুন
কিডনিতে পাথর হওয়ার লক্ষণসমূহ - কিডনি সুস্থ রাখার উপায় ভূমিকা
আমাদের শরীরের রক্ত চলাচল এবং রক্ত পরিশোধনের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ অংশ হচ্ছে
কিডনি। সেই কিডনিতে কোন সমস্যা দেখা দিলে , শরীরের অন্যান্য অঙ্গে সমস্যা সৃষ্টি
হতে পারে। সেজন্য শরীর সুস্থ রাখার জন্য , কিডনির সুস্থ থাকা অত্যন্ত
গুরুত্বপূর্ণ।
আপনি যদি কিডনি জাতীয় কোন সমস্যাই ভোগেন , তাহলে আজকের আর্টিকেলটি গুরুত্ব
সহকারে শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত পড়ুন। আজ আমরা আলোচনা করব কিডনিতে পাথর হওয়ার
লক্ষণসমূহ , কিডনিতে পাথর কেন হয় , কিডনির পাথর প্রতিকার এর উপায় , কিডনি সুস্থ
রাখার উপায় সম্পর্কে। চলুন তাহলে দেরি না করে জেনে নেওয়া যাক বিস্তারিত।
কিডনিতে পাথর কেন হয়
চিকিৎসা বিজ্ঞানের মতে কিডনিতে পাথর হওয়ার সঠিক কোন কারণ এখন পর্যন্ত বের করা
সম্ভব হয়নি। তবে চিকিৎসা বিজ্ঞানের গবেষণায় কিডনিতে পাথর হওয়ার সাম্প্রতিক
কিছু ধারণা দেওয়া হয়েছে।
- কিডনিতে পাথর হওয়ার অন্যতম প্রধান কারণ হচ্ছে পর্যাপ্ত পানি পান না করা বা ডিহাইড্রেশন। যারা নিয়মিত পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান করেন না তাদের প্রসাব অনেক ঘন হয় , যা থেকে কিডনিতে পাথর তৈরি হয়।
- মানুষের শরীরে কিছু খনিজ উপাদান রয়েছে যেমনঃ সাইট্রেট , জিংক , ম্যাগনেসিয়াম , ইত্যাদি এই উপাদানগুলোর পরিমাণ কমে গেলেও কিডনিতে পাথর তৈরি হয়।
-
শরীরে কিছু উপাদান থাকে যেমনঃ ইউরিক অ্যাসিড , প্রশাবে ক্যালসিয়াম ইত্যাদির
পরিমাণ বেড়ে গেলে কিডনিতে পাথর তৈরীর সম্ভাবনা হতে পারে।
-
কিডনিতে পাথর হওয়ার আরো একটি কারণ হচ্ছে কাঁচা লবণ খাওয়া। কাঁচা লবণ খাওয়া
স্বাস্থ্যের পক্ষে খুবই ক্ষতিকর। কাঁচা লবণে থাকা সোডিয়াম খুব সহজেই কিডনিতে
পাথর তৈরি করতে পারে।
-
মূত্র প্রবাহ বাধাগ্রস্থ হলে , এবংমূত্র তন্ত্রে জন্মগত কোন সমস্যা হলে
কিডনিতে পাথর হতে পারে ।
-
আপনার বংশের বা পরিবারের সদস্যদের মধ্যে কারো কিডনিতে পাথর থাকলে , পরবর্তীতে
আপনার কিডনিতে ও পাথর হতে পারে।
-
৪০ থেকে ৫০ উর্ধ্ব বয়সী ব্যক্তিদের কিডনিতে পাথর হওয়ার সম্ভবনা থাকে।
-
পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান না করলে কিডনিতে পাথর হওয়া সম্ভবনা বেড়ে যাই।
-
অতিরিক্ত পরিমাণে আমিষ ও প্রোটিন সমৃদ্ধ খাবার খাওয়ার কারণে কিডনিতে পাথর
হওয়ার সম্ভাবনা বেড়ে যায়।
- শরীরে অতিরিক্ত মেদ এবং চর্বি থাকার কারণে কিডনিতে পাথর হতে পারে।
কিডনিতে পাথর হওয়ার লক্ষণসমূহ
অনেক অনেক সময় কিডনিতে পাথর হওয়ার কোন লক্ষণ থাকে না। মূত্রথলিতে পাথর না
পৌঁছানো পর্যন্ত কিডনিতে পাথর হওয়ার লক্ষণ বোঝা যায় না। নিচে কিডনিতে পাথর
হওয়ার কিছু লক্ষণসমূহ সম্পর্কে আলোচনা করা হলো
-
প্রসাবে হালকা রক্ত যাওয়া বা লাল প্রসাব হতে পারে।
-
তলপেট এবং ওপর পেটের ডান বা পাশে মাঝে মাঝে হালকা ব্যথা হতে পারে।
-
পেট - পিঠ থেকে কুচকির দিকে প্রচন্ড ব্যথা অনুভূত হতে পারে।
-
পেট এবং কুঁচকি ব্যথার পাশাপাশি বমি এবং জ্বর হতে পারে।
-
পাঁজরের নিচে এবং পেটের দুই পাশে ব্যথা হতে পারে।
-
প্রসব করার সময় প্রচন্ড ব্যথা হওয়া।
-
কিছুক্ষণ পরপর প্রসবের মাত্রা বেড়ে যাওয়া।
-
প্রসবের কালার গোলাপি অথবা বাদামি হয়ে যাওয়া ইত্যাদি।
কিডনির পাথর প্রতিকার এর উপায়
কিডনিতে পাথর প্রতিকার এর সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় যেটি , সেটি হচ্ছে প্রচুর
পরিমাণে পানি পান করতে হবে। এবং নিয়মিত খাদ্যাভ্যাসে কিছু পরিবর্তন নিয়ে আসতে
হবে। কিডনির পাথর প্রতিকারের কিছু উপায় নিচে তুলে ধরা হলো
-
পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান করতে হবে।
-
কাঁচা লবণ খাওয়া বাদ দিতে হবে এবং রান্না করা খাবারের ও লবণ কম ব্যবহার করতে
হবে।
-
অতিরিক্ত আমিষ এবং প্রোটিন জাতীয় খাবার কম খেতে হবে।
-
অতিরিক্ত পরিমাণে ভিটামিন সি ও ভিটামিন ডি খাওয়া পরিহার করতে হবে।
-
ইউরিক এসিড থেকে পাথর হলে মাংস খাওয়া কমাতে হবে।
-
এক্সালেট যুক্ত খাবার যেমনঃ মিষ্টি আলু , চকলেট , চা , পালং শাক ইত্যাদি
জাতীয় খাবার খাওয়া বন্ধ করতে হবে।
- বেশি বেশি ক্যালসিয়াম যুক্ত খাবার খেতে হবে।
-
প্রাথমিক অবস্থায় কিডনিতে পাথর ধরা পড়লে ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী ঔষধ সেবন
করতে হবে।
কিডনি সুস্থ রাখার উপায়
কিডনি সুস্থ রাখতে এবং কিডনিতে পাথর প্রতিরোধ করার জন্য , খাদ্য অভ্যাসে কিছু
পরিবর্তন এবং পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান করতে হবে। কিডনি সুস্থ রাখার জন্য যা
করবেন , সেই সম্পর্কে নিচে বিস্তারিত আলোচনা করা হলো।
-
কিডনি সুস্থ রাখতে এবং কিডনিতে পাথরের ঝুঁকি কমাতে , অবশ্যই পর্যাপ্ত পরিমাণে
পানি পান করতে হবে।
-
অনেকক্ষণ ধরে প্রসব চেপে রাখা , কিডনির জন্য অত্যন্ত ক্ষতিকর , প্রসবের
অতিরিক্ত বেগের আগেই প্রসাব ত্যাগ করে ফেলতে হবে।
-
কিছুক্ষণ পরপর এবং বারবার যদি প্রসাবের বেগ লাগে তাহলে অতি দ্রুত চিকিৎসকের
পরামর্শ নিতে হবে।
-
দুগ্ধ জাতীয় খাবার অতিরিক্ত খাওয়া হতে বিরত থাকতে হবে।
-
চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়া যে কোন ওষুধ অথবা ব্যথার ওষুধ এবং অ্যান্টিবায়োটিক
ওষুধ কখনোই খাওয়া যাবে না।
- প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন সি জাতীয় খাবার খেতে হবে।
কিডনিতে পাথর হওয়ার লক্ষণসমূহ - কিডনি সুস্থ রাখার উপায় শেষ কথা
পরিশেষে বলতে গেলে আজ আমরা উপরের আর্টিকেলটি থেকে জানতে পারলাম , কিডনিতে পাথর
হওয়ার লক্ষণসমূহ , কিডনিতে পাথর কেন হয় , কিডনির পাথর প্রতিকার এর উপায় ,
কিডনি সুস্থ রাখার উপায় ইত্যাদি বিষয়গুলো সম্পর্কে বিস্তারিত।
তাই আশা করছি আজকের আর্টিকেলটি আপনি শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত মনোযোগ সহকারে পড়ে ,
কিডনি বিষয়ক সকল তথ্য , এবং কিডনি সুস্থ রাখার উপায় সম্পর্কে বিস্তারিত সমাধান
পেয়ে গেছেন। কিডনি বিষয়ক আরো কোন প্রশ্ন থেকে থাকলে আমাদের সঙ্গে যোগাযোগ করতে
পারেন । আমাদের ওয়েবসাইটটিতে নিয়মিত স্বাস্থ্য বিষয়ক , তথ্যপ্রযুক্তি বিষয়ক ,
এবং সমকালীন সকল তথ্য এবং আপডেট নিউজ পাবলিশ করা হয়। নিয়মিত এরকম তথ্যবহুল
পোস্ট পেতে আমাদের ওয়েবসাইটটি ভিজিট করুন ধন্যবাদ।
thank you