জরায়ু বড় হওয়ার কারন কি - কি খেলে জরায়ু ভালো থাকে
প্রিয় পাঠক আপনি কি জরায়ু বড় হওয়ার কারন কি - কি খেলে
জরায়ু ভালো থাকে , এবং জরায়ু সম্পর্কিত বিস্তারিত তথ্য সম্পর্কে অনেক খোঁজাখুঁজি
করেছেন কিন্তু কোথাও কোনো সঠিক তথ্য খুঁজে পাননি । চিন্তা করবেন না আজকের পোস্টটি
আপনার জন্য গুরুত্বপূর্ণ । কেননা আজ আমরা আলোচনা করব জরায়ু সম্পর্কে বিস্তারিত।
তাই আজকের পোস্টটি না টেনে মনোযোগ সহকারে পড়ার চেষ্টা করুন। তাহলে জরায়ু
সম্পর্কিত বিস্তারিত তথ্য জানতে পারবেন।
তাহলে পাঠকগণ আপনি যদি জরায়ু সম্পর্কিত কোন সমস্যাই ভোগেন। এবং জরায়ু সম্পর্কিত
কোনো তথ্য জানতে চান। তাহলে আজকের পোস্টটি শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত মনোযোগ সহকারে
পড়তে থাকুন। তাহলে জরায়ু সম্পর্কিত বিস্তারিত তথ্য আপনি আজকের পোস্টটি থেকে
পেয়ে যাবেন। চলুন তাহলে দেরি না করে জেনে নেওয়া যাক বিস্তারিত।
ভূমিকা
জরায়ু হচ্ছে নারীদের
শরীরের
অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি অঙ্গ। বর্তমানে প্রায়ই নারীদের সমস্যায় ভুগতে দেখা
যায়। তাই আজকে আপনাদের জন্য আমাদের আয়োজন। জরায়ু বড় হওয়ার কারন কি - কি খেলে
জরায়ু ভালো থাকে ,জরায়ু কোথায় থাকে ,জরায়ু ছোট হওয়ার কারণ ,জরায়ু ফোলার
কারণ ,জরায়ু ইনফেকশনের লক্ষণ ,জরায়ু দেখতে কেমন ইত্যাদি বিষয়গুলো সম্পর্কে।
তাই জরায়ু সম্পর্কিত বিস্তারিত তথ্য পেতে আজকের পোস্টটি শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত
মনোযোগ সহকারে পড়ুন।
জরায়ু কোথায় থাকে
জরায়ুর অবস্থান দেহের মধ্যরেখা বরাবর
মূত্রাশয়
ও মলাশয়ের মাঝখানে অবস্থিত। চিকিৎসা বিজ্ঞানের ভাষায় গঠন
পেলভিক অঞ্চলের মধ্যে এবং
মুত্রাশয়ের ঠিক পেছনে এবং এর উপরে প্রায় শোয়ানো অবস্থায় কোলন এর সামনে
জরায়ুর অবস্থান। মানুষের জরায়ুতে দেখতে অনেকটা নাশপাতি ফল এর মত। একটি
প্রাপ্তবয়স্ক মানুষের জরায়ু ৬০ গ্রাম পর্যন্ত হয়ে থাকে।
মূলত জরায়ুর তিনটি প্রান্ত রয়েছে। উপরের দুই পাশে দুইটি নালিতে উন্মুক্ত টিউব
যেটি দিয়ে ডিম্বাণু জরায়ুতে প্রবেশ করে। এবং তৃতীয় প্রান্তটি থাকে নিচের দিকে
যৌনাঙ্গে উন্মুক্ত অবস্থায়। যা দিয়ে যৌন মিলনের মাধ্যমে পুরুষ দেহ থেকে
শুক্রানু প্রবেশ করে জরায়ুতে। এবং সেটি ডিম্বাণুর সাথে মিলিত হয় জরায়ুতে।
জরায়ু বড় হওয়ার কারন কি
চিকিৎসা বিজ্ঞানের মতে জরায়ু বড় হবার প্রধানতম কারণ হচ্ছে পেরিমেনপজ বা মেনোপজ
এর আগে শরীরে হরমোনের ভারসাম্যর সমস্যা থেকে অনেক সময় জরায়ু বড় হতে পারে। তবে
সে ক্ষেত্রে মেনোপজ হয়ে যাওয়ার পর এই সমস্যা প্রাকৃতিকভাবে ঠিক হয়ে যায়।
- বিশেষজ্ঞদের মতে ফাইব্রয়েডস মানে জরায়ুর ভেতরের অংশ , ফাইব্রয়েডস এর পরিমাণ বেড়ে গেলে জরায়ু বড় হতে পারে।
- জরায়ুর ক্যান্সারের কারণে ও জরায়ু বড় হয়ে যেতে পারে।
- অনেক সময় পলিস্টিক ওভারি সিনড্রোম হরমোনের ভারসাম্যের কারণে জরায়ু বড় হয়ে যেতে পারে। এ ছাড়াও রক্তপাত , ব্যথা , ইত্যাদি সহ শরীরে প্রভাব পড়তে পারে।
- অনেক সময় জরায়ুতে সিস্ট এর আকার বড় হবার কারণে , জরায়ুর আকার বড় হয়ে যেতে পারে।
এটা নিয়ে খুব বেশি চিন্তা করার কারণ না হলেও , অনেক সময় এটি জরায়ু ও
ক্যান্সারের মতো জটিল সমস্যা দেখা দিতে পারে।
জরায়ু ছোট হওয়ার কারণ
জরায়ুর গঠন ছোট হওয়া এটি একটি অস্বাভাবিকতা। যা বেশ কিছু কারণে হতে পারে যেমন
- জন্মগতঃ গর্ভকালীন থাকা অবস্থায় ভ্রুক্ষেপ সময় কালে জরায়ুর অনুরোধে অসম্পন্ন বিকাশ উপস্থিত থাকে যার ফলে ভূমিষ্ঠ হওয়া শিশুর জরায়ু ছোট হতে পারে।
- বংশগতঃ যদি ভূমিষ্ঠ হওয়া শিশুর মা-বাবা ভাই বোন অথবা বংশের করো জরায়ু ছোট থাকলে। সে ক্ষেত্রে বংশীয় কারণে বাচ্চার জরায়ু ছোট হতে পারে।
- এন্ডোক্রাইন অস্বাভাবিকতাঃ অনেক সময় বয়ফ্রেন্ডের আগে বা পিটুরি খুব বেশি প্রলেপ্টিন করে এবং জরায়ুর বিকাশ কে ত্বরান্বিত করে। এছাড়াও পিটুরির আপনার টিউমার হরমোন গুলিকে আঘাত করা এবং ব্যথা করা থেকে জরায়ুর পরিবর্তন দেখা দেয়।
- এছাড়াও কিছু গর্ভবতী মহিলা অস্বাস্থ্যকর পরিবেশের সংস্পর্শে আসার ক্ষেত্রে সন্তানের জরায়ু ছোট হতে পারে।
- এছাড়াও জরায়ু ছোট হওয়ার কারণ হিসাবে
- যাদের সংক্রামক রোগ রয়েছে।
- শরীরে জটিল কোন রোগ রয়েছে।
- জরায়ুর অপারেশন হওয়ার ফলে।
- অতিরিক্ত শারীরিক মিলন এর ফলে ও জরায়ু ছোট হবার সম্ভাবনা রয়েছে
জরায়ু ফোলার কারণ
চিকিৎসা বিজ্ঞানের মতে জরায়ু ফোলার কারণ হিসাবে , লেবিয়া বা যৌনাঙ্গের যে
মাংসশালী দুটি ঠোঁটের মতো অংশ রয়েছে , সে দুটিতে ফুসকুড়ি হওয়া , ভুলে যাওয়া ,
বা লাল হয়ে যাওয়া ইত্যাদির জন্য এলার্জি বা ব্যাকটেরিয়ার সংক্রমণকে দায়ী করা
হয়েছে। এছাড়াও বিভিন্ন কারণে যোনিপথ্যে বা প্রসবের রাস্তায় চুলকানি হওয়ার ফলে
জরায়ু ফোলে যায়।
এগুলো হতে পারে দৈনন্দিন জীবনে কিছু অসাবধানতার কারনে। যেমন টাইট জামা কাপড় এবং
টাইট অন্তরবাস ব্যবহার করার কারণে , শরীরে এলার্জি র সমস্যা হওয়ার কারণে।
এলার্জি হয় এমন বস্তু যেমন কাপড় সাবান প্রসাধনী ইত্যাদির কারণে যোনিপথে
ব্যাকটেরিয়া এবং ছত্রাক এর সংক্রমণের কারণে । যোনিপথ এবং জরায়ু ফুলে যায়।
এছাড়াও ব্যর্থলিনের সিস্ট হলে জরায়ু ফুলে যায়।
জরায়ু ইনফেকশনের লক্ষণ
চিকিৎসা বিজ্ঞানের মতে অন্যান্য কারণ এর পাশাপাশি জরায়ু ইনফেকশনের প্রধান লক্ষণ
এবং কারণটি হচ্ছে। জন্মনিয়ন্ত্রণ বড়ি সেবনের ফলে জরায়ু ইনফেকশন হতে পারে।
জরায়ুতে ইনফেকশন হলে তলপেটে এবং কোমরের নিচে ব্যথা হয় , এবং এটি চলতেই থাকে।
নিচে জরায়ুতে ইনফেকশনের লক্ষণগুলো তুলে ধরা হলো।
- অনিয়মিত মাসিক এবং ঘন ঘন জ্বর হওয়া।
- মাসিকের সময় তীব্র যন্ত্রণা করা।
- তলপেটে ঘন ঘন ব্যথা অনুভূত হওয়া।
- মলমূত্র ত্যাগ এর সময় যৌনাঙ্গ দিয়ে রক্ত বের হওয়া।
- শারীরিক মিলনের সময় যৌনাঙ্গে ব্যথা অনুভূত হওয়া।
- মাসিক ঠিকমত না হওয়া , এবং কোন কোন সময় মাসিক অনেক দেরিতে হওয়া।
- পুরো শরীরে জ্বালাপোড়া করা।
- প্রসবের আগে এবং পরে প্রচন্ড রকমের যন্ত্রণা করা।
- জরায়ু ফোলা এবং শক্ত হয়ে যাওয়া।
- অতিরিক্ত গ্যাস এবং কোষ্ঠকাঠিন্য হওয়া।
- দুর্গন্ধযুক্ত সাদাস্রাব হওয়া।
- সহবাসের পর রক্ত বের হওয়া।
- মাসিক ছাড়াও ঘন ঘন রক্তস্রাব হওয়া।
কি খেলে জরায়ু ভালো থাকে
জরায়ু একজন নারীর শরীরের অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি অংশ। বর্তমানে প্রায়
নারীদেরকে জরায়ুর সমস্যায় ভুগতে দেখা যায়। তাই আজ আপনাদের জানাবো জরায়ু ভালো
রাখতে যে খাবারগুলো নিয়মিত খাবেন সেই খাবারগুলো সম্পর্কে।
- শাকসবজিঃ শাকসবজিতে প্রচুর পরিমাণে ক্যালসিয়াম , পটাশিয়াম , ম্যাগনেসিয়াম , এবং ভিটামিন মজুদ রয়েছে। এই পুষ্টি উপাদান গুলো জরায়ু ভালো রাখতে বিশেষ ভূমিকা পালন করে। তাই জরায়ু ভালো রাখতে নিয়মিত শাকসবজি খান।
- ফলমূলঃ আপনি জরায়ু ভালো রাখতে প্রতিদিন ভিটামিন সি ও বায়োফ্লাভনয়েড সমৃদ্ধ ফল খান। এই পুষ্টি উপাদান গুলো আপনার জরায়ুর স্বাস্থ্য ভালো রাখতে সাহায্য করে। এবং জরায় বিভিন্ন ব্যাকটেরিয়া এবং সংক্রমণের হাত থেকে রক্ষা করে। তাই জরায়ু ভালো রাখতে নিয়মিত ফলমূল খান।
- ভাইবার সমৃদ্ধ খাবারঃ নিয়মিত খাদ্য তালিকায় ফাইবার সমৃদ্ধ খাবার যোগ করুন। ভাইবা সমৃদ্ধ খাবার আপনার শরীরের বক্সিং ও বর্জ্য দূর করতে বিশেষ ভূমিকা পালন করে। এই ধরনের খাবার আপনার শরীরের সঞ্চিত অতিরিক্ত ইস্ট্রোজেন অপসরণে সাহায্য করে। এবং জরায়ু ফাইব্রয়েট গঠনে বাধা দেয়। এবং আপনার জরায়ুর স্বাস্থ্য ভালো রাখতে সাহায্য করে।
- দুগ্ধ জাতীয় খাবারঃ আপনি জরায়ু ভালো রাখতে দুগ্ধ জাতীয় খাবার নিয়মিত খান যেমন দই , পনির , দুধ এবং মাখন এর মত দুগ্ধ জাতীয় খাবার জরায়ুর স্বাস্থ্য ভালো রাখতে বেশ কার্যকরী। দুগ্ধ জাতীয় খাবার গুলোতে ক্যালসিয়াম এবং ভিটামিন ডি মজুদ থাকে। যা জরায়ুর স্বাস্থ্য ভালো রাখতে বিশেষ ভূমিকা পালন ক...
- বাদামঃ জরায়ু ভালো রাখতে বাদামে থাকা ও মেগা ৩ , ফ্যাটি এসিড , কোলেস্টেরল ইত্যাদি পুষ্টি উপাদান বেশ কার্যকর ভূমিকা পালন করে। বিশেষ করে ও মেগা ৩ , ফ্যাটি অ্যাসিড জরায়ু স্বাস্থ্য ভালো রাখার পাশাপাশি জরায়ুর ক্যান্সার ঝুঁকি কমাতে বেশ কার্যকরী।
- লেবুঃ লেবুতে থাকা প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন সি আমাদের শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধির পাশাপাশি , ভিটামিন সি জরায় প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করতে বিশেষভাবে কার্যকরী। আপনি নিয়মিত সকালে এক গ্লাস গরম পানিতে লেবুর রস মিশিয়ে খেলে আপনার জরায়ুর স্বাস্থ্য ভালো থাকবে।
- সামুদ্রিক মাছঃ সামুদ্রিক মাছে থাকা ওমেগা ৩ এবং খ্যাতি অ্যাসিড শরীরের বিশেষ পুষ্টিগুণ বৃদ্ধিতে কাজ করে। এছাড়াও সামুদ্রিক মাছের থাকা বিভিন্ন উপাদান শরীরের জরায়ু ভালো রাখতে বিশেষ উপকারী। তাই জরায়ু ভালো রাখতে নিয়মিত খাদ্য তালিকায় সামুদ্রিক মাছ খেতে পারেন।
জরায়ু দেখতে কেমন
লেখক এর মতামত
পরিশেষে বলতে গেলে আজ আমরা উপরের আর্টিকেলটি পড়ে বিস্তারিত জানতে পারলাম জরায়ু
বড় হওয়ার কারন কি - কি খেলে জরায়ু ভালো থাকে ,জরায়ু ইনফেকশনের লক্ষণ সহ আরো
বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ বিষয় সম্পর্কে বিস্তারিত । আশা করছি আপনি উপরে আর্টিকেলটি
মনোযোগ সহকারে পড়ার মাধ্যমে জরায়ু সম্পর্কিত বিস্তারিত তথ্য ইতিমধ্যে জেনে
গেছেন। জরায়ু সম্পর্কিত আরো কোন তথ্য জানার থাকলে আমাদেরকে কমেন্টের মাধ্যমে
জানাবেন। পাশাপাশি স্বাস্থ্য বিষয়ক বিভিন্ন টিপস এবং ইনফরমেশন পেতে নিয়মিত
আমাদের ওয়েবসাইটটি ভিজিট করুন। ধন্যবাদ
thanks for your kind information